নুর উদ্দিন, ছাতক (সুনামগঞ্জ) : সুনামগঞ্জের ছাতকে চাচাতো বোন সাহানা জাহান পলি ও তার স্বামী যুবলীগ নেতা দেলোয়ার মাহমুদ জুয়েল বক্সের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করছেন ইকবাল হোসেন। মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার জাউয়াবাজারের লক্ষণসোম নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

ইকবাল হোসেন লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করেন, ২০০৬ সালে ছাতক পৌর শহরের বাগবাড়ি মহল্লার মৃত মাহমুদ আলী বক্স এর ছেলে উপজেলা যুবলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি দেলোয়ার মাহমুদ জুয়েল বক্সকে পরিবারের অমতে গিয়ে পালিয়ে বিয়ে করেন সাহানা জাহান পলি। সে ছাতক পৌরসভার নোয়ারাই ইসলামপুর এলাকার মৃত শাহজাহান মিয়ার কন্যা। ২টি ছেলে ও একটি কন্যা সন্তান নিয়ে তারা সিলেট শহরের এয়ারপোর্ট থানাধীন খাসদবির বন্ধন বি-৫ এর ভাড়াটিয়া বাসায় বসবাস করে আসছেন।
সম্প্রতি ভরণ পোষন না দেওয়া ও যৌতুকের দাবিতে শারিরিক নির্যাতন করায় তার স্বামী দেলোয়ার মাহমুদ জুয়েল বক্স এর ঘর থেকে তার পিত্রালয়ে আশ্রয় নেন শাহানা জাহান পলি। এরপর সে তার স্বামীর বিরুদ্ধে আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় দেলোয়ার মাহমুদ জুয়েল বক্স পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়ে কারাভোগ করেন। এছাড়া গত ২৬ নভেম্বর ২০২৪ সালে সুনামগঞ্জ আদালতে উপস্থিত হয়ে স্বামী দেলোয়ার মাহমুদ জুয়েল বক্সকে তালাকের নোটিশ প্রদান করেন স্ত্রী সাহানা জাহান পলি। কারাভোগের প্রতিশোধ নিতে দেলোয়ার মাহমুদ জুয়েল বক্স তার স্কুল পড়ুয়া ছেলে তাহসিন বক্সকে অজ্ঞাত স্থানে লোকিয়ে রেখে সিলেটের এয়ারপোর্ট থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করে। ছেলে উদ্ধারের জন্য মানববন্ধন সহ বিভিন্ন চাপ প্রয়োগ করেন। এমনকি স্ত্রীসহ আত্মীয়স্বজনদের বিরুদ্ধে অপহরণ মামলা দায়েরের চেষ্টা করেও ব্যার্থ হন। গত ১০জানুয়ারি ছাতক প্রেসক্লাবে স্বামীর বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেন পলি। এ সময় তিনি বলেন মা হিসেবে তার একবারও মনে হয়না ছেলে হারিয়েছে। মুলত মামলা তুলে নিয়ে তার ঘরে ফিরে যাওয়ার জন্য এসব করতেছে তার স্বামী। সংবাদ সম্মেলনে জুয়েল বক্সের বিরুদ্ধে শারিরিক নির্যাতন, যৌতুকসহ নানা অভিযোগ তুলে ধরেন পলি। এরপর সন্তানদের উদ্ধারের জন্য আদালতে ১০০ ধারায় একটি পিটিশন দায়ের করেন। গত ১৪ ফেব্রুয়ারি শবেবরাতের রাতে গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গরা জুয়েল বক্সের সিলেটস্থ বাসায় বসে স্বামী-স্ত্রীর দ্বন্ধ আপোষ মিমাংশা করে দেন। এর চারদিন পর গত ১৯ ফেব্রুয়ারি আদালতে মামলা না চালানোর জন্য আবেদন করেন পলি। আবেদনে উল্লেখ করেন, সন্তানদেরকে তার নিকট প্রদান করায় তিনি আর মোকদ্দমা চালাতে চান না। তাই বিনা বিচারে মোকদ্দমা পত্যাহারের আদেশ চান। এতে স্পষ্ট হয় যে নিখোঁজ হওয়া সন্তান তার জিম্মায় ছিল।
এদিকে আদালতে আপোষনামা দাখিলের প্রায় ২মাস ১০দিন পর গত ৩১মে তাদের নিখোঁজ হওয়া ছেলেকে সাথে নিয়ে সিলেটস্থ অনলাইন প্রেসক্লাবে একটি সংবাদ সম্মেলন করেন সাহানা জাহান পলি। গত ২৭ জানুয়ারি সিলেট থেকে ছেলে নিখোঁজ হলে গত ২০ মে সুনামগঞ্জর বিশ্বম্ভরপুরের ধনপুরবাজার মসজিদ থেকে উদ্ধার দেখানো হয়। এ ঘটনায় গত ২৯ মে সিলেট আদালতে আমি এবং আমার পিতা, জাউয়াবাজার ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম ও তার ভাই মো. সৈয়দুল ইসলামকে জড়িয়ে ষড়যন্ত্রমূলক একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করে সাহানা জাহান পলি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জাউয়াবাজার ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম ও তার ভাই মো. সৈয়দুল ইসলাম। তাদের দাবি স্বামী-স্ত্রী ও সন্তানকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে থলের বিড়াল বেরিয়ে আসবে।