দিল্লিতে মায়ের সঙ্গে ঈদ করেছেন জয়

নিউজ ডেস্ক

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ‘ঈদ করতে’ তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের ভারত ভ্রমণের খবর দিয়েছে একাধিক সংবাদমাধ্যম।

হিন্দুস্তান টাইমস বলছে, শেখ হাসিনা ভারতে আশ্রয় নেওয়ার পর জয়ই প্রথম ব্যক্তি, যিনি তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে দিল্লি এলেন।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, জয়ের ভারতে আসার বিষয়ে অবগত আছেন— এমন ব্যক্তি তাদের এসব তথ্য দিয়েছে।

হিন্দুস্তান টাইমস লিখেছে, বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক জয়ের ভারত ভ্রমণ সম্পর্কে দিল্লির তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

ভারতে আসার বিষয়ে অবগত ব্যক্তিরা বলছেন, তার সফরসূচি সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যায়নি। তবে কোনো জনসমাগমে যাওয়ার কোনো পরিকল্পনা আপাতত জয়ের নেই।

আওয়ামী লীগের ‘ঘনিষ্ট একজনের’ বরাতে সংবাদমাধ্যমটি লিখেছে, “তিনি মূলত মায়ের সঙ্গে ঈদ করতে ভারতে এসেছেন। শেখ হাসিনা গত অগাস্টে ভারতে আসার পর থেকে জয়ই প্রথম ব্যক্তি, যিনি তার সঙ্গে দেখা করলেন।”

ভারতের ‘নিরাপত্তা সংস্থা ও আওয়ামী লীগের একাধিক নেতার’ বরাতে বিবিসি বাংলার খবরে বলা হয়, জয় ভারতে পা রাখেন শুক্রবার; কোরবানির ঈদের আগের দিন।

জুলাই-অগাস্ট অভ্যুত্থানে ক্ষমতা হারানোর পর থেকেই ভারতে আছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। তিনি দিল্লির প্রাণকেন্দ্রে ‘নিরাপদ কোনো বাড়িতে’ আছেন বলে হিন্দুস্তান টাইমসের খবরে বলা হয়।

বিচারের মুখোমুখি করতে শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠানোর জন্য ভারতকে অনুরোধ জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। তবে ভারত সে অনুরোধে এখনও কোনো সাড়া দেয়নি।

মানবতাবিরোধী অপরাধের পাঁচটি অভিযোগ আমলে নিয়ে চলতি মাসের শুরুতে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। আগামী ১৬ জুন তাকে আদালতে আজির করার আদেশও দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল।

হিন্দুস্তান টাইমস বলছে, ভারত এবং বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সম্পর্ক এখন সবচেয়ে তলানিতে রয়েছে।

আওয়ামী লীগের শাসনামলে গুম ও জুলাই অভ্যুত্থানে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় চলতি বছরের জানুয়ারিতে মোট ৯৭ জনের পাসপোর্ট বাতিল করে সরকার। এ তালিকায় জয়ের নামও আছে।

পাসপোর্ট বাতিল হওয়ার পর জয় কীভাবে ভারতে যাওয়ার অনুমতি পেলেন, সেই খবর আওয়ামী লীগ নেতাদের বরাতে দিয়েছে বিবিসি বাংলা।

সংবাদমাধ্যমটি লিখেছে, জয় সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের পাসপোর্ট হাতে পান। এর কয়েক দিন আগে পান যুক্তরাষ্ট্রের গ্রিন কার্ড। গ্রিন কার্ড পাওয়ার পর থেকেই তার ভারত ভ্রমণ নিয়ে আলোচনা চলছিল।

ভারতীয় নিরাপত্তা এজেন্সির একাধিক সূত্রের বরাতে বিবিসি বাংলা বলছে, আরও মাস কয়েক পরে জয়ের ভারতে আসার কথা ছিল। কিন্তু দিল্লির সবুজ সংকেত পেয়ে তিনি সফর এগিয়ে আনেন।

নিরাপত্তা এজেন্সির সূত্রগুলো বলছে, বিমানবন্দর থেকে যথাযথ নিরাপত্তা দিয়েই তাকে পৌঁছে দেওয়া হয় শেখ হাসিনার কাছে।

বিবিসি বলছে, ওই ঠিকানায় শেখ রেহানাও আছে বলে আওয়ামী লীগের কয়েকটি সূত্র তাদের নিশ্চিত করেছে।

ভারতীয় নিরাপত্তা এজেন্সির সূত্রগুলো বলছে, ভিভিআইপিদের যেভাবে নিয়ে যাওয়া হয়, ঠিক সেভাবে সজীব ওয়াজেদ জয়কে বিমানবন্দর থেকে নেওয়া হয়নি। তবে কড়া নিরাপত্তা ছিল, আর পুরোটাই করা হয়েছে অত্যন্ত গোপনে।

শেখ হাসিনার কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুলও কর্মসূত্রে দিল্লিতে থাকেন। তিনি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ডব্লিউএইচওর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক।

কিন্তু ভাইয়ের সঙ্গে তার দেখা হয়েছে কিনা, সেটা কোনো সূত্র থেকে নিশ্চিত হতে পারেনি বিবিসি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসিলেট ও সুনামগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে ৭০ জনকে পুশ-ইন
পরবর্তী নিবন্ধদেশে ফিরেছেন ৮৬০৬ জন হাজি, ২৩ জনের মৃত্যু